জাতীয় স্বার্থের শ্রেণীবিভাগ ও রক্ষার উপায় আলোচনা করো - Discuss the classification and protection of national interests?

জাতীয় স্বার্থের শ্রেণীবিভাগ ও রক্ষার উপায় আলোচনা করো ?
জাতীয় স্বার্থের শ্রেণীবিভাগ ও রক্ষার উপায়


জাতীয় স্বার্থের শ্রেণীবিভাগ: জাতীয় স্বার্থ হলো আন্তর্জাতিক রাজনীতির অন্যতম মৌলিক ধারণা। জাতীয় স্বার্থ বলতে বোঝায় জাতির সেই সমস্ত ন্যূনতম লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সমূহ কে বোঝায় যেগুলি পূরণের জন্য রাষ্ট্রসমূহ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে এই ন্যূনতম লক্ষ্য পূরণের জন্য জাতীয় নিরাপত্তা, জাতীয় উন্নয়ন ও শান্তিপূর্ণ বিশ্ব ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।

জাতীয় স্বার্থের শ্রেণীবিভাগ করো:
জাতীয় স্বার্থ রক্ষার উপায়: সাধারণভাবে পাঁচটি উপায়ে জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করা যায়।-
১) কূটনীতি: জাতীয় স্বার্থ রক্ষার অন্যতম প্রধান উপাদান হলো কূটনীতি। কূটনীতিবিদরা নিজের দেশের সরকার কর্তৃক গৃহীত পররাষ্ট্রনীতিকে রাষ্ট্রপ্রধান ও ওইসব দেশের জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তোলার সর্বোচ্চ চেষ্টা করে। এইজন্য তারা মূলত তিনটি পদ্ধতি অনুসরণ করে -
a) বিশ্বাস রক্ষা   b) আপোষ রফা  c) বল প্রয়োগের ভীতিপ্রদর্শন। জাতীয় স্বার্থ রক্ষায় কূটনীতিবিদদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য পামার ও পার্কিনস তাদের নিজ নিজ দেশের চক্ষু ও কর্ণ বলেছেন।

২) প্রচারকার্য: প্রচার কার্যের মাধ্যমে একটি রাষ্ট্র নিজ দেশের  জাতীয় স্বার্থ সমন্বিত পররাষ্ট্রনীতির অনুকূলে অন্যান্য দেশের মতামত গড়ে তুলতে পারে। এইজন্য তারা বেতার, দূরদর্শন, সংবাদপত্র, সাময়িকপত্র এমনকি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমেও সংগৃহীত নীতির যৌক্তিকতা প্রমাণের চেষ্টা করে।

৩) জোট গঠন: আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার অন্যতম একটি মৌলিক উপাদান হলো জোট গঠন। মূলত জাতীয় স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যেই রাষ্ট্রগুলি নিজেদের মধ্যে জোট গঠন করে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরবর্তীকালে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পশ্চিমী  ধনতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলিকে নিয়ে গড়ে তোলে ন্যাটো (NATO - 1949)। অন্যদিকে সোভিয়েত রাশিয়া পূর্বের সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলি কে নিয়ে গড়ে তোলে 'ওয়ারশ‌ চুক্তিজোট' (1949)।

৪) অর্থনৈতিক সাহায্য ও ঋণদান: আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সাহায্য ও ঋণ দানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অনেক রাষ্ট্রই নিজরাষ্ট্রের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে থাকে।যেমন- পশ্চিমের উন্নত দেশগুলি বিশ্বের অর্ধ উন্নত ও উন্নতি কামি দেশগুলিকে অর্থনৈতিক সাহায্য ও ঋণদান করে থাকেন।  এই ধরনের অর্থনৈতিক সাহায্য ও ঋণ দানের মাধ্যমে ঋণ প্রদানকারী দেশ গুলি ঋণগ্রহণকারী রাষ্ট্রগুলির অকুণ্ঠ সমর্থন লাভের চেষ্টা করেন।

৫) বল প্রয়োগ: অনেক সময় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলি বলপ্রয়োগের ভীতি প্রদর্শন করে থাকে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়-  1965 খ্রিস্টাব্দে জাতীয় স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে নিয়েই পাকিস্তান কাশ্মীর দখলের উদ্দেশ্যে ভারত আক্রমণ করে। আবার অনেক সময় দেখা যায় শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলি বর্তমান যুগেও জাতীয় স্বার্থ রক্ষার উদ্দেশ্যে অন্য রাষ্ট্রে অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে উদাহরণস্বরূপ বলা যায় আমেরিকা এখনো অ্যাঙ্গোলা, নিকারাগুয়া প্রভৃতি রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে হস্তক্ষেপ করে।

পোস্টগুলো ভাল লেগে থাকলে নিচে কমেন্ট করতে পারেন এবং আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করতে পারেন বিভিন্ন শিক্ষনীয় বিষয় ভিডিও আকারে দেখার জন্য।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.